0 টি ভোট
সংস্কার আন্দোলন হিসেবে আলীগড় আন্দোলনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য উল্লেখ করো?

ভূমিকা- 

অষ্টাদশ ও উনবিংশ শতাব্দীতে অবিভক্ত ভারতে যেসব সংস্কার আন্দোলন মুসলমানদেরকে অজ্ঞতা, কুসংস্কার, অশিক্ষা, আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে সংগঠিত করে তোলে তার মধ্যে স্যার সৈয়দ আহমদ পরিচালিত আলীগড় আন্দোলন ছিল অন্যতম। সমাজসেবা ও সমাজ সংস্কারে মহান ব্রততে স্যার সৈয়দ আহাম্মদ খানের গতিময় নেতৃত্বে আলীগড় আন্দোলন দানা বেঁধে ওঠে এবং চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। ব্রিটিশ শাসকগণ ক্ষমতা দখলের পর ভারতীয় মুসলমানদের অবস্থা দুর্বিসহ হয়ে উঠে। মুসলমানগণ স্বাধীনতার জন্য আন্দোলন ও ব্রিটিশদের অসহযোগিতার কারণে ব্রিটিশদের নিকট শত্রু বলে বিবেচিত হয় এবং তাদের ধর্ম, শিক্ষা, সম্পদ সবকিছুই ধ্বংসপ্রাপ্ত হওয়ার উপক্রম হয়। স্যার সৈয়দ আহমদ ঐ সকল সুযোগ-সুবিধা বঞ্চিত মুসলমানদেরকে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্তির জন্য শুরু করেন আন্দোলন যা আলীগড় আন্দোলন নামে পরিচিত।

আলীগড় আন্দোলনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য-

মুসলমানদের পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলার লক্ষ্যে এ আন্দোলন শুরু হলেও তা পরবর্তীতে বহুমুখী উদ্দেশ্য অর্জনের লক্ষ্যে পরিচালিত হয়। উদ্দেশ্যগুলো নিম্নরূপ-

  • ১. মুসলমান সমাজে বিদ্যমান গোঁড়ামি, অজ্ঞতা, কুসংস্কার প্রভৃতি দূরীকরণ এবং সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে মুসলমানদের হৃত গৌরব ও ঐতিহ্য পুনরুদ্ধার।মুসলমান সম্পর্ক উন্নয়ন আধুনিক জ্ঞানবিজ্ঞানের সাথে পরিচিত।
  •  ২. পিছিয়ে পড়া মুসলমানদেরকে উদ্বুদ্ধকরণ ও ইংরেজ হয়ে দক্ষ ও শক্তিশালী জাতি হিসেবে গড়ে তোলার জন্য ইংরেজি শিক্ষা ও পাশ্চাত্য ভাবধারায় শিক্ষিত করে তোলা।
  • ৩. হিন্দু জাতীয় কংগ্রেসের পাশাপাশি মুসলিম স্বার্থ রক্ষায় কর্মসূচি গ্রহণ করা।
  • ৪. ব্রিটিশ সরকারের আস্থা অর্জন।
  • ৫. ব্রিটিশ প্রশাসনসহ বিভিন্ন উচ্চ পদে মুসলমানদেরকে নিয়োগ দান।

আলীগড় আন্দোলনের কার্যক্রমসমূহ-

আলীগড় আন্দোলনকে সফল করার জন্য স্যার সৈয়দ আহমদ ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছিলেন। আলীগড় আন্দোলনের ক্ষেত্রে গৃহীত কার্যক্রমগুলো নিম্নে আলোচনা করা হলো-

১. বই প্রকাশনা-

 আন্দোলনের প্রারম্ভে স্যার সৈয়দ আহমদ কতিপয় প্রসিদ্ধ গ্রন্থ রচনা করেন। ১৮৫৯ সালে তিনি শিল্পবিপ্লবের কারণ ও ঘটনাবলি যথাযথভাবে বিশ্লেষণ করে "আলবান ই-ভাগাওয়াত হিন্দ" (উর্দু) শীর্ষক গ্রন্থ রচনা করেন। এটি ১৮৭৩ সালে ২য় সংস্করণ ইংরেজিতে প্রকাশপূর্বক এক কপি ব্রিটিশ পার্লামেন্টের প্রত্যেক সদস্যের নিকট প্রেরণ করেন। প্রখ্যাত ঐতিহাসিক William Hunter মুসলমান জনগণের দুঃখ-দুর্দশা ও ব্রিটিশ সরকারের নিপীড়নের কথা তাঁর "Indian Mussalmans" গ্রন্থে লিপিবদ্ধ করেন। সরকার, জনগণ, শাসক ও শাসিতদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটানোর জন্য স্যার সৈয়দ আহমদ "The Loyal Mohammedans of India" নামক গ্রন্থে মুসলমানদের দোষ-ত্রুটির কথা উল্লেখ করে প্রকাশ করেন যা সকলের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়া আবুল ফজলের আইন-ই-আকবরী সম্পাদনা করেন। ১৮৫৮ সালে "সিপাহী বিদ্রোহের কারণ" বইটি প্রকাশ করেন। এছাড়া শাসক ও শাসিত উভয়কে শিক্ষা দেয়ার জন্য এবং সম্ভাব্য সংঘাত ও ভুল বুঝাবুঝির কারণ দূর করতে সচেষ্ট হন। যার ফলশ্রুতি হিসেবে ভারতে বিদ্রোহের কারণ শীর্ষক পুস্তিকাও প্রকাশ করেন।

২. অনুবাদ সমিতি প্রতিষ্ঠা-

মুসলমানদেরকে পাশ্চাত্য শিক্ষার সাথে পরিচিত করানোর জন্য স্যার সৈয়দ আহমদ খান ১৮৫৩ সালে প্রথমে একটি বিজ্ঞান সমিতি প্রতিষ্ঠা করেন। পরে এটি আলীগড়ে স্থানান্তরিত হয়। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল জ্ঞানবিজ্ঞান, আলোচনা, প্রচার নিজেদের ঐতিহ্যবাহী গ্রন্থগুলো ইংরেজিতে এবং ইংরেজদের মধ্যে মেলামেশা ও সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান এবং ভাব বিনিময় করা। দেশিয় ভাষায় ভূগোল আধুনিক কলা ও বিজ্ঞান সম্পর্কিত কোনো উপযুক্ত বই ছিল না। তাই এ অনুবাদ কেন্দ্রের মাধ্যমে পাশ্চাত্য বিষয়ক গ্রন্থাবলি অনুবাদের ব্যবস্থা করা হয়। এ অনুবাদ সমিতি পরবর্তীতে "সাহিত্য ও বিজ্ঞান সমিতি" নামে পরিচিতি লাভ করে।

৩. পত্রিকা প্রকাশ-

পত্রিকা প্রকাশ করে জনসাধারণকে সচেতন করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। ১৮৬৬ সালে বিজ্ঞান সমিতির পক্ষ থেকে "আলীগড় ইনস্টিটিউট গেজেট" নামে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা বের হয়। ১৮৭০ সালে স্যার সৈয়দ আহমদ খান মুসলিম সমাজের রীতিনীতি সংস্কারের জন্য "তাহজিবুল আখলাক" নামে উর্দু ভাষায় একটি পত্রিকা বের করেন। এর মূল উদ্দেশ্য হলো ভারতবাসী ও ইংরেজগণ যাতে প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে অবগত হয়ে উভয়ের মধ্যে সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটাতে সক্ষম হয়। এছাড়াও সামাজিক অবনতির কারণ ও সমাধান ব্যাখ্যা করেন। ১৮৬৪ সালে "The Mohammedan Social Reformer" নামক পত্রিকায় প্রবন্ধ রচনা করেন এবং তাতে জনগণের মধ্যে শিক্ষার গুরুত্ব অনুধাবনের উপাদান সমৃদ্ধ করা হয়। সৈয়দ আহমদ লক্ষ্য করেন যে, তার স্বধর্মীয় মুসলমানদের শিক্ষাদীক্ষা যুগের তুলনায় অত্যন্ত অপ্রতুল। আর এজন্য তিনি বলেন যে, শিক্ষা দাও, শিক্ষা দাও, শিক্ষা দাও তাহলে এ ব্যবস্থায় একদিন ভারতে সমস্ত রাজনৈতিক সামাজিক ব্যাধি দূর করতে পারে। মূল ভালো কর তাহলে বৃক্ষ সুশোভিত হবে।

৪. শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন-

শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য স্যার সৈয়দ আহমদ ১৮৭৫ সালে আলীগড়ে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। ১৮৭৭ সালে এটি "মোহামেডান এ্যাংলো ওরিয়েন্টাল কলেজে” উন্নীত হয় এবং পরে ১৯২০ সালে এটি "মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়" নাম ধারণ করে। এছাড়া তিনি গাজীপুরে একটি ইংরেজি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন যা পরবর্তীতে কলেজে রূপান্তরিত হয়। জনগণের শিক্ষার অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৮৬৪ সালে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলাসমূহের জন্য একটি শিক্ষা কমিটি স্থাপন করেন।

৫. মোহামেডান এ্যাডুকেশন কংগ্রেস-

মুসলমানদের শিক্ষা, সংস্কার, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এবং বুদ্ধিবৃত্তিক উন্নয়ন সাধনের লক্ষ্যে ১৮৮৬ সালে মোহামেডান এডুকেশন কংগ্রেস প্রতিষ্ঠিত হয়। এর নাম পরিবর্তন করে ১৮৯০ সালে "Mohammedan Educational Conference" রাখা হয়। এর মাধ্যমে আলীগড়ের বার্তা জনগণের নিকট পৌঁছে দেয়া হয়। এতে জ্ঞানবিজ্ঞান, সাহিত্য, দর্শন প্রভৃতি প্রচারিত হয় এবং মুসলমানদের মূল্যবোধ ও দৃষ্টিভঙ্গিতে যুগোপযোগী পরিবর্তন সাধিত হয়। এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেই আলীগড় আন্দোলন সুসংগঠিত হয় এবং সারা ভারতে ছড়িয়ে পড়ে।

৬. ব্রিটিশ ভারত সমিতি-

ব্রিটিশ শাসকদের নিকট থেকে সুবিধা আদায়ের লক্ষ্যে এবং ব্রিটিশ ও মুসলমানদের মধ্যে সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠার জন্য ১৮৬৬ সালে "ব্রিটিশ ভারত সমিতি" গঠন করা হয়। এ সমিতির মাধ্যমে বঞ্চিত মুসলমানগণ তাদের দাবি-দাওয়া ব্রিটিশদের নিকট পেশ করেন। তবে এ সমিতি মাত্র এক বছর স্থায়ী হয়। তদুপরি কেউ কেউ এই এসোসিয়েশনকে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের পথিকৃৎ বলে মনে করেন।

৭. মূল্যায়ন-

স্যার সৈয়দ আহমদ খান সদাসর্বদা নিজের কল্যাণের চেয়ে সমাজের মঙ্গল কামনা করতেন অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে। তিনি এমন একটি শিক্ষিত সম্প্রদায় গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন, যারা জ্ঞান ও বুদ্ধিতে অপর সমাজের বিদগ্ধজনের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারে। যাদের উপর নির্ভর করবে জাতির ভবিষ্যৎ এবং হারানো গৌরব পুনরুদ্ধারের গুরুদায়িত্ব। মুসলমানদের প্রকৃত অবস্থা পর্যালোচনা করে সঠিক দিক আবিষ্কার করা হলো আলীগড় আন্দোলনের প্রধান কাজ। আলীগড় আন্দোলনের সামগ্রিক কর্মকাণ্ড মুসলিম মানসে এক নতুন ধ্যান-ধারণা ও কর্ম অভিজ্ঞতা সঞ্চারিত করে এক নবযুগের সূচনা করে।

সমকালীন সমাজের প্রেক্ষাপটে আলীগড় আন্দোলনের প্রভাব-

অধিকার বঞ্চিত ও হতাশাগ্রস্ত মুসলমানদের অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং রাজনৈতিক ক্ষেত্রে এর প্রভাব সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়ে। নিম্নে আলীগড় আন্দোলনের কতিপয় প্রভাব আলোচনা করা হলো-

১. মুসলিম জাতীয়তার উন্মেষ- 

আলীগড় আন্দোলনই মুসলমানদের অংশ গ্রহণে অনুপ্রাণিত করে। মুসলমানদের পৃথক ও একক স্বাধীনতা ও স্বাধীন সত্তা লাভের পটভূমি রচনা করেছিল।

 ২. মুসলমানদের মধ্যে নবজাগরণ সৃষ্টি-

আলীগড় আন্দোলনের কারণে অনেক মুসলিম মনীষী সমাজে নবজাগরণের সচেষ্ট হন। এদের মৌলভী চেরাগ আলী, সৈয়দ আমীর আলী, বদরুদ্দীন তায়েবজীর নাম উল্লেখযোগ্য। নওয়ার আব্দুল লতিফের মোহামেডান লিটারেরি সোসাইটি, সৈয়দ আমীর আলীর সেন্ট্রাল মোহামেডান এবং বদরুদ্দীন তায়েবজীর আনজুমান-ই-ইসলাম মুসলমানদের পুনর্জাগরণে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে।

৩. রাজনৈতিক সচেতনতা সৃষ্টি-

আলীগড় আন্দোলনের মাধ্যমে উদারবাদী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব সৈয়দ আহমদ কতিপয় বাস্তবমুখী ও সুদূরপ্রসারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। এতে ইংরেজ-মুসলিম ভুল বুঝাবুঝির অবসান হয় এবং ইংরেজ-মুসলিম বৈপরীত্যের পরিবর্তে সুসম্পর্ক গড়ে তোলে।

৪. সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি-

এর মধ্যেমে মুসলমানদের মধ্যে পাশ্চাত্য শিক্ষা গ্রহণের আগ্রহ সৃষ্টি হয়। ফলে তারা ইংরেজি প্রশাসনের সহযোগিতা ও সামঞ্জস্যতা বিধানের মাধ্যমে সমাজে পুনপ্রতিষ্ঠিত হয়। আলীগড় আন্দোলনের মাধ্যমে সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি হয়।

৫. শিক্ষিত মধ্যবিত্ত মুসলিম শ্রেণি সৃষ্টি-

স্যার সৈয়দ আহমদ বোঝাতে পেরেছিলেন যে, শিক্ষাক্ষেত্রে মুসলমানরা যতোদিন হিন্দু সম্প্রদায়ের সমক্ষক না হবে ততোদিন পর্যন্ত তাদের দুর্দশা দূর হবে না। তার প্রচেষ্টার ফলে মুসলমানরা পাশ্চাত্য শিক্ষার সংস্পর্শে আসতে সক্ষম হয়। তিনি উপমহাদেশের নগরবাসী মুসলমানদের মধ্যে শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণি গড়ে তুলতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করেন।

৬. সহযোগিতামূলক রাজনৈতিক ধারা প্রবর্তন-

১৮৫৭ সালের সিপাহী বিপ্লবোত্তর মুসলমানদের স্বার্থ রক্ষার স্বার্থে সৈয়দ আহমদ রাজানুগত্য প্রদর্শন করেন। কারণ অধঃপতিত ও হতাশাগ্রস্ত মুসলমানদের সিপাহী বিদ্রোহের পর যেভাবে ইংরেজ রাজশক্তির আক্রোশ ও নির্মম অত্যাচারের শিকার হয়েছিল। তাতে ভারতবর্ষে একটি জাতিগোষ্ঠী হিসেবে মুসলমানদের বেঁচে থাকা দায় হয়ে ওঠে। 

৭. সম্পর্ক উন্নয়ন ও অধিকার অর্জন-

 আলীগড় আন্দোলনের ফলেই মুসলমানরা ইংরেজদের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তুলে। তাদের সকল প্রকার ভুল বুঝাবুঝির অবসান ঘটে। আলীগড় আন্দোলনের ফলে মুসলমানরা তাদের অধিকার আদায়ে সক্ষম হয়।

৮. শিক্ষাবিস্তার-

 আলীগড় আন্দোলনের মাধ্যমে শিক্ষাক্ষেত্রে সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়ে। মুসলমানরা ইংরেজ ও অন্যান্য আধুনিক জ্ঞানবিজ্ঞান, সাহিত্য দর্শন প্রভৃতি অধ্যয়ন শুরু করে। ফলে শিক্ষাক্ষেত্রে মুসলমানরা ব্যাপক উন্নতি সাধন করে। ফলে তাদের স্বাধীনতা রক্ষিত হয়।

৯. সমাজ সংস্কার-

 রাজ্যহারা মুসলমান জাতি ইংরেজদের প্রতি বিদ্বেষ মনোভাব নিয়ে এবং ধর্মীয় গোঁড়ামি, সামাজিক কুসংস্কার ও সংকীর্ণ মানসিকতা নিয়ে সমাজে অবাঞ্ছিতভাবে বসবাস করতো। আলীগড় আন্দোলনের মাধ্যমে এসব দূর করা হয়।

১০. শিক্ষা বিস্তার-

আলীগড় আন্দোলনের ফলে মুসলমানরা আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে চাকরিসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে হিন্দুদের সক্ষমতা অর্জন করে।

১১. হারানো গৌরব উদ্ধার-

আলীগড় আন্দোলনের মাধ্যমে মুসলমানরা আন্দোলনের মাধ্যমে উদারবাদী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব সৈয়দ আহমদ কতিপয় বাস্তবমুখী ও সুদূরপ্রসারী পদক্ষেপ নেন।

উপসংহার-

 পরিশেষে বলা যায় যে, স্যার সৈয়দ আহমদ খানের জীবনব্যাপী সাধনার ফল এ আলীগড় আন্দোলন। মুসলমান সমাজকে অন্ধ অশিক্ষার গহ্বার থেকে মুক্ত করে জানের উজ্জ্বল আলোকে আনয়ন করাই ছিল তাঁর জীবনের ব্রত। আলীগড় আন্দোলনের সফলতার ক্ষেত্রে স্যার সৈয়দ আহমদ খানের পুত্র সৈয়দ মাহমুদও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। আলীগড় আন্দোলন কালক্রমে ভারতীয় মুসলমানদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করে এবং অধিকার ও স্বার্থ রক্ষায় ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হয়। এর ফলে এমন এক শ্রেণির উদ্ভব হয় যারা পাশ্চাত্য এবং নিজেদের মর্যাদা রক্ষা এবং হারিয়ে যাওয়া গৌরব পুনরুদ্ধার করার জন্য নতুনভাবে চিন্তা করতে সক্ষম হয়।

0 টি ভোট
নারী কল্যাণ ও সংস্কারক হিসেবে রাজা রামমোহন রায়ের ভূমিকা মূল্যায়ন করো?

ভূমিকা-

বাংলা, পাক-ভারত উপমহাদেশে প্রচলিত বিভিন্ন কুসংস্কার, জাতিভেদ ও বর্ণভেদ প্রথা, নারী অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং হিন্দুধর্মের সংস্কারের লক্ষ্যে উনিশ শতকে কতকগুলো সংস্কার আন্দোলন গড়ে উঠেছিল। তাদের মধ্যে একটি অন্যতম সংস্কার ও আন্দোলনধর্মী প্রতিষ্ঠান হলো ব্রাহ্মসমাজ। ভারতবর্ষের পুনর্জাগরণের অগ্রদূত রাজা রামমোহন রায় কিছু আধুনিক পশ্চিমা আদর্শের প্রভাবমুক্ত যুক্তিসম্পন্ন ও উদারনৈতিক বন্ধুর সহযোগিতায় নতুন ধর্মমত ও পথের সন্ধানে ১৮২৮ সালে এ 'ব্রাহ্মসমাজ' প্রতিষ্ঠা করেন। ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠার আগে তিনি ১৮১৫ সালে আত্মীয় সভা এবং ১৮২১ সালে 'ইউনিটারিয়ান কমিটি' নামে আর একটি সভা স্থাপন করেন। কিন্তু নানাবিধ কারণে এ সভা দুটো খুব বেশি জনপ্রিয়তা লাভ করতে সক্ষম না হওয়ায় এগুলোকে পুনর্গঠিত করে তিনি ব্রাহ্মসমাজ গড়ে তোলেন।পরম নিরাকার এক ব্রাহ্ম বা সৃষ্টিকর্তার উপাসনার জন্য এর নাম দেওয়া হয় ব্রাহ্মসমাজ।

ব্রাহ্মসমাজের অবদান। নিম্নে ব্রাহ্মসমাজের অবদান তুলে ধরা হলো-

১. উপাসনালয় প্রতিষ্ঠা-

 ১৮৩০ সালের ২৩ জানুয়ারি কলকাতায় ব্রাহ্মসমাজের নতুন ভবন নির্মিত হয়। এ উপাসনা মন্দিরে জাতি-ধর্ম-বর্ণ শ্রেণি নির্বিশেষে পরমেশ্বরে উপাসনার জন্য উন্মুক্ত করা মূর্তি, চিত্র বা প্রতীকী ব্যবহার, মদ্যপান, অন্য ধর্ম ওক্সালিহিংসা নিহিত ঘোষিত হয়। সভা-সমিতির মাধ্যমে পরম স্রষ্টার ধ্যান-ধারণার প্রসার, প্রেম-প্রীতি, ভক্তি ভালোবাসা, দয়া-দাক্ষিণ্য নৈতিক চরিত্র প্রভৃতি সৎগুণাবলির বিকাশ সাধনের প্রচেষ্টা চালানো হয়।

২. সতীদাহ প্রথা উচ্ছেদ-

হিন্দু সমাজে প্রচলিত জঘন্য ও নিষ্ঠুর প্রথা সতীদাহ উচ্ছেদে ব্রাহ্মসমাজ কার্যকর ভূমিকা পালন করে। স্বামীর মৃত্যুর পর স্ত্রীকে সতী হিসেবে মানুষের গায়ের লোম সংখ্যা বছর পতিসহ সুখে বসবাসের লোভ দেখিয়ে স্বামীর জ্বলন্ত চিতায় পড়িয়ে মারা হতো। রাজা রামমোহন রায় এ অমানবিক প্রথার বিরুদ্ধে সচেতনতা ও জনমত সৃষ্টি করে। ১৮১৯ সালের ৪ ডিসেম্বর লর্ড বেন্টিঙ্ক সতীদাহ প্রথা উচ্ছেদ আইন প্রণয়ন করে এর বিরুদ্ধে দণ্ডাদেশ জারি করেন। প্রাচীন পন্থি গোঁড়া হিন্দুরা এর প্রতিবাদ করেন। তার সরকার এবং প্রিভি কাউন্সিলের কাছে এই আইন প্রত্যাহারের জন্য আপিল করে। রাজা রামমোহন বিভিন্ন যুক্তিতর্কসহকারে সতীদাহ প্রথা উচ্ছেদেরাজা রামমোহন বিভিন্ন যুক্তিতর্কসহকারে সতীদাহ প্রথা কমন্স সভায় গমন করেন। ফলে গোঁড়া হিন্দুদের আপিল বরখাস্ত হয় এবং চিরদিনের জন্য সতীদাহ প্রথা উচ্ছেদ হয়।

৩. শিক্ষাবিস্তার-

 শিক্ষা বিশেষত নীতিমূলক ও নারী শিক্ষা বিস্তারে ব্রাহ্মসমাজ ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। কেশবচন্দ্রের পরিচালনায় কোলকাতা কলেজ, নারী শিক্ষার জন্য ভিক্টোরিয়া কলেজ (১৮৭০) কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে মেয়েদের পরীক্ষা ব্যবস্থা (১৮৮৭) ও অনন্যা স্কুল কলেজ, নৈশ্যবিদ্যালয়, শ্রমিকদের জন্য পৃথক বিদ্যালয় প্রভৃতি প্রতিষ্ঠিত হয়। বই-পুস্তক ও পত্রিকা প্রকাশ, গ্রন্থাগার প্রভৃতির মাধ্যমে শিক্ষা বিস্তারে এ আন্দোলন অবদান রাখে। নারী শিক্ষার জন্য অন্তঃপুর স্ত্রী শিক্ষার সভা গঠিত হয়।

৪. কুসংস্কার দূরীকরণ-

হিন্দু সমাজে প্রচলিত বহুবিধ কুসংস্কার প্রতিরোধ ও প্রতিকারে ব্রাহ্মসমাজ সফল হয়। যেমন বিধবাদের পুনঃবিবাহ, বাল্য ও বহু বিবাহ রোধ, নারীপুরুষের বিয়ের বয়স বৃদ্ধি, অসমবর্ণ বিয়ে সঙ্গতকরণ যৌতুক প্রথা বর্জন, অজ্ঞতা দূরীকরণ হিন্দু রমণীদের সম্পত্তিতে মালিকানা প্রতিষ্ঠা প্রভৃতি। ব্রাহ্ম মহিলাদের প্রচেষ্টায় নারী শিক্ষা সম্প্রসারণ ও কুসংস্কার দূরীকরণ কার্যক্রম বেশ ফলপ্রসূ হয়েছিল। তারা বাল্য বিয়ে রোধকল্পে বাল্য বিয়ে নির্ধারণী সংঘ প্রতিষ্ঠা করেন। গোঁড়ামি বর্ণভেদ প্রথা প্রভৃতি দূরীকরণেও ব্রাহ্মসমাজ বিশেষ ভূমিকা পালন করে। রাজনৈতিক সচেতনতা সৃষ্টিতে এর অবদান অনন্য।

৫. কার্যক্রম পরিচালনা-

সমাজসেবা ও ত্রাণকাজেও ব্রাহ্মসমাজ অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। উত্তর ও পশ্চিম ভারতে দুর্ভিক্ষ চলাকালে এবং ভাগীরথীর তীরে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ দেখা দিলে সমাজের পক্ষ থেকে কমিটি গঠন করে দুর্গতদের সেবা করা হয়। তাছাড়া সমাজ জলা জঙ্গল উচ্ছেদ, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ইত্যাদি প্রকল্প গ্রহণ করে।

৬. মাদকদ্রব্য বর্জন-

 ১৮৭০ সালে প্রতিষ্ঠিত ভারত সংস্কার সভা বিভাগের মাধ্যমে মদ ও মদ্যপান নিবারণে পদক্ষেপ নেওয়া হয়। সরকারের কাছে মাদকদ্রব্য আবেদনের ফলে মদ্য ব্যবসায়ে বিধি নিষেধ আরোপিত হয়। ১৮৭৮ সালে গঠিত আশালতা দল নামক প্রতিষ্ঠা মাদকদ্রব্য গ্রহণের বিরুদ্ধে জনমত সৃষ্টি করে।

৭. আন্দোলনের সম্প্রসারণ-

 ব্রাহ্মসমাজ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, একেশ্বরবাদ প্রচার, কুসংস্কার দূরীকরণ প্রভৃতি ক্ষেত্রে ব্যাপক পদক্ষেপের মাধ্যমে সম্প্রসারিত হয়। তবে গোঁড়াপন্থি যুক্তিবাদী ও উদারপন্থিরা ব্রাহ্মসমাজের সম্প্রসারণে এগিয়ে আসেন। দেবেন্দ্রনাথ, প্রসন্নকুমার ঠাকুর, নীলরতন হালদার, কেশবচন্দ্র প্রমুখ মনীষীর প্রচেষ্টার ব্রাহ্মসমাজ সমাজসংস্কারে ব্যাপক আন্দোলন ও আলোড়ন সৃষ্টি করে। বাংলাদেশেও এর সম্প্রসারণ ঘটে এবং ১৮৪৬ সালে ঢাকায় সর্ববৃহৎ ও স্থাপত্য কারুকার্য সমৃদ্ধ ব্রাহ্ম মন্দির স্থাপিত হয়।

উপসংহার-

পরিশেষে বলা যায় যে, ব্রাহ্মসমাজ ভারতবর্ষের বিভিন্ন কুসংস্কারের মূলোৎপাটন, শিক্ষাবিস্তার, সম্প্রীতি স্থাপন, নারীদের সমান মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং সর্বোপরি আধ্যাত্মিক উন্নতিতে অনন্য অবদান রাখতে সক্ষম হয়। সতীদাহ প্রথার বিলোপ পর্দা প্রথার বিলোপ শিশুবিবাহ নিরুৎসাহিতকরণ বহুবিবাহ রোধ প্রভৃতি ক্ষেত্রে যথাযথ ভূমিকা পালনে ব্রাহ্মসমাজ সদ্য সচেষ্ট ছিল। ভারতীয় নবজাগরণের অগ্রদূত রামমোহন রায় কর্তৃক প্রতিটিতে ব্রাহ্মসমাজ সমগ্র ভারতবর্ষে জাতীয়তাবাদী আদর্শ প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।

0 টি ভোট
ধর্মীয় ও সমাজ সংস্কারে ব্রাহ্মসমাজের ভূমিকা তুলে ধর?

ভূমিকা-

হিন্দুসমাজের প্রচলিত বিভিন্ন ধরনের কুসংস্কার দূরীকরণ ও জাতিভেদ দ্বন্দ্ব নিরসনে সমাজ সংস্কারের অন্যতম একটি সংগঠন হলো ব্রাহ্মসমাজ। অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষার্ধে ও উনবিংশ শতাব্দীতে ভারতীয় উপমহাদেশে সমাজসংস্কারের অন্যতম প্রবর্তক হলো রাজা রামমোহন রায়। সমাজসংস্কার আন্দোলনের অন্যতম প্রবর্তক হলো রাজা রামমোহন রায়। সমাজসংস্কার আন্দোলনের অন্যতম এক রূপ এই ব্রাহ্ম সমাজ পরিচালিত কার্যক্রম। ১৮২৮ সালে আত্মীয়সভার অসংখ্য সদস্য নিয়ে রাজা রামমোহন রায় ধর্মভিত্তিক এই ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠা করেন। ধর্মীয় ও সমাজ সংস্কারে ব্রাহ্মসমাজের ভূমিকা অনন্য।

ধর্ম ও সমাজসংস্কারে ব্রাহ্মসমাজের অবদান তৎকালীন ধর্ম ও সমাজসংস্কারে ব্রাহ্মসমাজের অবদান অনস্বীকার্য। ব্রাহ্মসমাজের ধর্মীয় ও সামাজিক সংস্কারে কিছু ভূমিকা নিম্নরূপ-

১. নারী শিক্ষার প্রসার- 

নারী শিক্ষার প্রসারে ব্রাহ্মসমাজের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেশবচন্দ্র সেন বাংলাদেশে নারী শিক্ষার ক্ষেত্রে অনন্য অবদান রেখেছেন। তিনি ১৮৬৩ সালে 'ব্রাহ্মবন্ধু' সভা প্রতিষ্ঠা করেন। যার মাধ্যমে নারীদেরকে বিশেষ করে বয়স্কা নারীদের জন্য 'অন্তঃপুর স্ত্রী শিক্ষা' সভা গঠন করেন ও শিক্ষা দান চালিয়ে যান। ঘরে বসেই নারীরা যাতে শিক্ষালাভকরতে পারে তার ব্যবস্থা এতে থাকে।

২. গণতন্ত্রের চর্চা-

 গণতন্ত্র চর্চা ও প্রসারে ব্রাহ্ম সমাজ অগ্রণী ভূমিকা রাখে। ব্রাহ্ম সমাজে উঁচু-নিচু জাত পাত্র ভেদাভেদ না করে এতে সকলের অংশগ্রহণের সুযোগদান নিশ্চিত করে। সবাই স্বাধীনভাবে মতামত প্রকাশ ও সমাজে শৃঙ্খলা রক্ষা করে চলার শিক্ষা পায়। ফলে গণতন্ত্রের জয়যাত্রা সূচিত হয়।

৩. সৎগুণাবলির বিকাশে সহায়তা-

মানুষ প্রভুর শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি।তার প্রভুর প্রতি রয়েছে অনেক কর্তব্য। পরমেশ্বরের উপাসনার জন্য মানুষ উপাসনালয়ে যায়। ১৮৩০ সালে ব্রাহ্মসমাজ নতুন ভবন স্থাপন করার মাধ্যমে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকলের জন্য উপাসনার সুযোগ সৃষ্টি করে। ঐ ভবনের বিভিন্ন সভাসমিতির মাধ্যমে প্রভুর আরাধনা, প্রেমপ্রীতি, দয়ামায়া, জীবপ্রেম প্রভৃতি সৎমানবীয় গুণাবলির বিকাশ ঘটানো হয়।

৪. মাদকদ্রব্য গ্রহণে বাধা সৃষ্টি-

ভারতীয় উপমহাদেশে সর্বপ্রকার মাদকদ্রব্য সেবন ও প্রসারে বাধা সৃষ্টি করে ব্রাহ্মসমাজ। ১৮৭০ সালে প্রতিষ্ঠিত ভারত সংস্কার সভা বিভােেগর মাধ্যমে মদ ও মদ্যপান নিবারণে আবেদন করা হলে ভারত সরকার মদ্য ব্যবহারের ওপর বিধি-নিষেধ আরোপিত হয়। মাদকের ব্যবহার বন্ধে ১৮৭৮ সালে গড়ে উঠে 'আশালতা দল'।

৫. বাল্যবিবাহ ও যৌতুকপ্রথা বন্ধ ও বিধবা বিবাহের প্রসারে-

 তৎকালীন সমাজে নারীকে ভোগ্যপণ্যের সাথে তুলনা করা হতো। নারীকে বিবাহের মাধ্যমে পণ অর্থাৎ-যৌতুক নিত বর পক্ষ। আর অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অল্প বয়সে মেয়েদের বিয়ে হতো। বিয়ের পর স্বামী মারা গেলে সারাজীবন বিধবা বা সতীদাহ প্রথার আদলে স্বামীর সঙ্গে চিতায় পুড়ে মারা হতো। এহেন করুণ অবস্থায় নারীদের অধিকার অর্থাৎ যৌতুক প্রথা উচ্ছেদ ও বাল্যবিবাহ বন্ধের পাশাপাশি বিধবাদের বিবাহ দানে এই ব্রাহ্মসমাজ কার্যকরী ভূমিকা রাখতে শুরু করে।

৬. বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন-

শিক্ষাকে কার্যকর রূপ দিতে কেশবচন্দ্র সেনের নেতৃত্বে ভিক্টোরিয়া কলেজ, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে মেয়েদের পরীক্ষা দানের সুযোগের সুবন্দোবস্ত করা হয়। ফলে নারী শিক্ষা ফলপ্রসূ হয়।

৭. সতীদাহ প্রথার বিলোপ সাধন-

ব্রাহ্মসমাজের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অবদান হলো সতীদাহ প্রথার বিলোপ সাধন। হিন্দু ধর্মান্ধতার এক নিষ্ঠুর পৈশাচিক প্রথা এই সতীদাহ। তৎকালীন হিন্দু সমাজে বিশ্বাস করা হতো যে, স্বামীর সঙ্গে চিতায় পুড়লে স্ত্রীও স্বর্গে যাবে। ১৮১৫ সাল থেকে ১৮২৮ সালে অবিভক্ত বাংলায় ৮,১৩৪টি এই অমানবিক সতীদাহের ঘটনা ঘটে। রাজা রামমোহন রায়ের নেতৃত্বে সতীদাহ প্রথা বিলোপ সাধন আইন পাস করেন ইংরেজ লর্ড বেন্টিংক ১৮২৯ সালের ৪ই ডিসেম্বর।

৮. নৈশ বিদ্যালয় ও বিধবাশ্রমের প্রসার-

অসহায় করে ব্রাহ্ম সমাজের মাধ্যমে। এবং দরিদ্র শ্রমিকদের অধিকার জ্ঞান বাড়াতে নৈশ বিদ্যালয় গড়ে তোলা হয়। ফলশ্রুতিতে সমাজে গঠনমূলক পরিবর্তন আসে।

৯. ধর্মীয় কুসংস্কার দূরীকরণ-

হিন্দু সমাজে বহু প্রভুতে বিশ্বাসী অনেকে ছিলেন। যারা মূলত ভ্রান্ত ধর্মীয় নীতি অনুসরণ করতো। এদেরকে সঠিক পথে আনতে রাজা রামমোহন রায় একেশ্বরবাদ ধারণা প্রচার করেন। এভাবে নানা ধর্মীয় ত্রুটি দূরীভূত হয়।

১০. জনগণকে অধিকার সচেতন-

ভারতীয় জনগণ তখনও ছিল ব্রিটিশ পরাভূত। রাজা রামমোহন রায় তাদের ধর্মীয় ভেদাভেদ ভুলে রাজনৈতিক ও সামাজিক অধিকার ভোগে শিক্ষার প্রসার ও কুসংস্কার দূরীকরণে ব্রাহ্মসমাজ নিয়ে প্রচেষ্টা চালাতে থাকে।

উপসংহার-

পরিশেষে বলা যায় যে, সমাজ পরিবর্তনশীল। সময়ের সাথে সাথে সমাজ হতে কুসংস্কার, ধর্মান্ধতা, অবিচার দূরীভূত হবে জোনো না কোনো সংস্কার সংগঠনের মাধ্যমে। ভারতীয় উপমহাদেশে ব্রাহ্মসমাজ তেমনি একটি গুরুত্বপূর্ণ সংগঠন ছিল। সুতরাং আধুনিক হিন্দু সমাজ বিনির্মাণে ব্রাহ্মসমাজের ভূমিকা অনস্বীকার্য ও তাৎপর্যমণ্ডিত।

0 টি ভোট
এপিডেমিওলজি এর ব্যবহারিক ক্ষেত্রসমূহ কি কি?
  • রোগের উৎস শনাক্তকরণে।
  • রোগের ঝুঁকির কারণ নির্ণয়।
  • রোগের বিস্তারের ধরণ।
  • রোগের প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ
  • মহামারি নিয়ন্ত্রণ
  • স্বাস্থ্য পরিষেবা উন্নয়ন।
  • চিকিৎসা ও গবেষণা
  • ডিজিজ সার্ভেইলেইন্স বা রেগুলার মনিটরিং
  • ভ্যাকসিন উন্নয়ন।
  • এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স।
0 টি ভোট
এপিডেমিওলজি কাকে বলে?

বিজ্ঞানের যে শাখায় রোগের উৎপত্তি, ইতিহাস, বিস্তৃতি ও প্রভাব নিয়ে আলোচনা করা হয় তাকে এপিডেমিওলজি বলে।

0 টি ভোট
কিভাবে টি-শার্ট ডিজাইন করে?

বর্তমানে আমাদের অনেকের শখ হয়ে থাকে যে আমরা ব্যান্ড মিউজিক এর অথবা যেকোনো নতুন ডিজাইনের টি-শার্ট কিনবো বা নিজের কাছে জমিয়ে রাখবো।সেটা হতে পারে শিরোনাম বা আফটার ম্যাথ বাংলা কিংবা অ্যাসেস এর।তো আমরা কয়েক জন বন্ধু মিলে কোনো জায়গায় বেড়াতে গেলে সেখানে গিয়েও সবাই এক ডিজাইনের শার্ট কিংবা টি-শার্ট পড়তে ইচ্ছা প্রকাশ করি।

  • T-shirt ডিজাইন করার উপায়

তাই এই হুটহাট সময়ে ইউনিক টি-শার্ট বাংলায় যাকে গ্রামের শহর গেঞ্জি বলে সেটা পাওয়ার জন্য একজন ডিজাইনারের কাছে আমাদের যেতে হয়।এখন আপনি যদি একজন দক্ষ ডিজাইনার হয়ে থাকেন তাহলে অতি সহজেই এই কাজটা সম্পন্ন করতে পারবেন।আর এতে করে আপনারাও বাড়তি অর্থ কম খরচ হবে।সেই টাকা দিয়ে খাবারের বিল কিংবা ভালো জায়গা ভ্রমণ করে আসতে পারবেন।এছাড়া আপনি নিজেই বিভিন্ন স্টাইলের গেঞ্জি ডিজাইন করে প্রফেশনাল ডিজাইনারদের মতো একটা শপ খুলে ভালো টাকা আয়ও করতে পারবেন।আর এটাতে মূলত সুবিধা হলো এখানে ইনভেস্ট বা পুঁজি কম থাকলেও তেমন কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়।এডোবি নামক এ্যাপ বা এমন ইলাস্ট্রেটর এ্যাপগুলার কিছু কাজ আয়ত্তে আনতে পারলেই আপনি ফোনে বা ল্যাপটপে ঘরে বসেই সহজে এই ডিজাইনার হয়ে উঠবেন।আর এসব কাজ শিখার জন্য টাকা দিয়ে তেমন কোনো কোর্স না করলেও চলবে।ইউটিউব বা গুগলের সহায়তা নিয়ে অনেক ভিডিও অথবা তথ্য দিয়ে ডিজাইনার হতে পারবেন।

তাই আজকের এই আর্টিকেলে টি-শার্ট ডিজাইন সম্পর্কে কিছু খুটিনাটি বিষয় তুলে আনার চেষ্টা করবো।জানি না আপনাদের মন কতটুকু জয় করতে পারবো।

0 টি ভোট
"Run" কমান্ড কিভাবে চালু করা হয়?

Run" কমান্ড চালু করার জন্য কীবোর্ডে "Windows + ৪" একসাথে চাপতে হয়। এটি চালু হলে সেখানে প্রয়োজনীয় কমান্ড টাইপ করে নির্দেশ দেওয়া যায়।

0 টি ভোট
রেজিস্ট্রি এডিটরে ফাইল এক্সপোর্ট করার প্রয়োজন কেন?
রেজিস্ট্রি এডিটরে ফাইল এক্সপোর্ট করলে রেজিস্ট্রির ব্যাকআপ তৈরি হয়। কোনো সমস্যা হলে ব্যাকআপটি পুনরায় ইমপোর্ট করে পূর্বের অবস্থা ফিরিয়ে আনা সম্ভব। তাই রেজিস্ট্রি এডিটরে ফাইল এক্সপোর্ট করা প্রয়োজন।
0 টি ভোট
সফটওয়্যার ডিলিট করার শেষে F3 ব্যবহার করা হয় কেন?

সফটওয়‍্যার ডিলিট করার পরে F3 বাটন চেপে রেজিস্ট্রির মধ্যে একই নাম বা সংশ্লিষ্ট এন্ট্রি খুঁজে বের করা হয়। একটি এন্ট্রি ডিলিট করার পর, রেজিস্ট্রির অন্য জায়গায় থাকা একই এন্ট্রিগুলো এভাবে খুঁজে নিয়ে মুছে দিতে হয়। এটি নিশ্চিত করে সফটওয়্যারটি সম্পূর্ণরূপে ডিলিট করা হয়েছে।

0 টি ভোট
বাংলাদেশে সমাজকর্মের গুরুত্ব আলোচনা করো?
  • ভূমিকা-

সমাজকর্ম হলো একটি সাহায্যকারী পেশা এবং সমস্যা সমাধানের বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া। প্রাচীনকাল থেকেই স্বেচ্ছামূলক বা অপেশাদার সমাজকল্যাণ সমাজের মানুষের প্রয়োজন এবং বিভিন্ন সমস্যার সমাধান দিয়ে আসছিল। কিন্তু আধুনিক যুগের শিল্পায়ন ও শহরায়নের ফলে উদ্ভূত নতুন ও জটিল সমস্যাসমূহের সমাধান যখন গতানুগতিক সমাজকল্যাণ দ্বারা মোকাবিলা করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে, তখন বস্তুত নতুন এবং জটিল সমস্যার বিজ্ঞানসম্মত সমাধানের লক্ষ্যেই সমাজকর্মের অভ্যুদয়।

 সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যেই যেহেতু সমাজকর্মের উদ্ভব, আর বাংলাদেশের সমাজে যেহেতু অসংখ্য সমস্যা বিরাজমান এ কারণে বাংলাদেশে সমাজকর্ম পাঠের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। নিম্নে বাংলাদেশে সমাজকর্ম পাঠের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা আলোচনা করা হলো-

  • ১. প্রাপ্ত সম্পদের সদ্ব্যবহার-

বাংলাদেশের জনগণের অজ্ঞতা ও নিরক্ষরতার কারণে সম্পদের যথাযথ ব্যবহার করতে জানে না। এক্ষেত্রে সমাজকর্ম পেশার জ্ঞানধারী দক্ষ সমাজকর্মীগণ অজ্ঞ ও নিরক্ষর জনগোষ্ঠীর যথোপযুক্ত প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে তাদের সম্পদের যথাযথ ব্যবহারের ব্যবস্থা করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। সুতরাং দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশে প্রাপ্ত সম্পদের সদ্ব্যবহার করতে সমাজকর্ম পাঠ করা জরুরি।

  • . সামাজিক কার্যক্রমকে বাস্তবোপযোগী করা-

বাংলাদেশের সঠিক আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়নের জন্য সমাজকর্ম পাঠ করা প্রয়োজন। কারণ সমাজকর্মের জ্ঞান ও কৌশল প্রয়োগ করে দেশের প্রচলিত সামাজিক কার্যক্রমকে বাস্তবোপযোগী করে তোলা সম্ভব। তাই বাংলাদেশে সমাজকর্ম পাঠের প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য।

  • ৩. কৃষি উন্নয়ন-

কৃষিপ্রধান বাংলাদেশের উন্নয়ন করতে হলে অবশ্যই কৃষির উন্নয়ন করতে হবে। আর সমাজকর্ম কৃষকদের উন্নয়নের জন্য অজ্ঞতা ও কুসংস্কার দূর করে কৃষকদের বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে প্রযুক্তিনির্ভর উন্নতমানের চাষাবাদে উদ্বুদ্ধ করে। ফলে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি পায় এবং কৃষকদের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটে। এজন্য বাংলাদেশে সমাজকর্ম পাঠ করা একান্ত প্রয়োজন।

  • . স্বাবলম্বী মনোভাব সৃষ্টি-

বাংলাদেশে বেকার জনগোষ্ঠীকে কাজে লাগানোর জন্য একদিকে যেমন দরকার প্রয়োজনীয় সুযোগ সৃষ্টির, তেমনি প্রয়োজন জনগণের মধ্যে স্বাবলম্বী মনোভাব গড়ে তোলা। সমাজকর্ম জনগণকে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা প্রদান করে স্বাবলম্বী হবার শিক্ষা প্রদান করে। তাই বাংলাদেশের জনগণকে স্বাবলম্বী করে তোলার জন্য সমাজকর্ম অধ্যয়ন করা প্রয়োজন।

  • . সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি-

সামাজিক সমস্যা সমাধানে সামাজিক সচেতনতা অত্যাবশ্যক। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সমাজকর্ম পদ্ধতিসমূহ বিশেষ করে সামাজিক কার্যক্রম পদ্ধতি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। সুতরাং দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির জন্যও সমাজকর্ম পাঠ করা প্রয়োজন।

  • ৬. মানব সম্পদ উন্নয়ন-

বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য মানব সম্পদের উন্নয়ন সাধন করা দরকার। আর সমাজকর্ম অধ্যয়নের মাধ্যমে মানব সম্পদের উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব। মানব সম্পদের উন্নয়নের মাধ্যমে কিভাবে আর্থসামাজিক উন্নয়ন ঘটানো যায় সমাজকর্ম অধ্যয়নের মাধ্যমে। তা জানা যায়। তাই বাংলাদেশে সমাজকর্ম পাঠের গুরুত্ব অপরিসীম।

  • ৭. সামাজিক সমস্যার প্রতিকার ও প্রতিরোধ-

বাংলাদেশের অসংখ্য সমস্যা অক্টোপাসের ন্যায় জড়িয়ে ধরে আছে। সমাজকর্ম এসব সমস্যার কারণ ও প্রকৃতি নির্ণয় এবং সমাধানের ব্যবস্থা করে থাকে। একারণে বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়নের স্বার্থে এসব সমস্যা সমাধানের জন্য সমাজকর্ম পাঠ করা প্রয়োজন।

  • ৮. সুষ্ঠু সামাজিক ভূমিকা পালন-

 বাংলাদেশের জনগণের যথাযথ ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা পালনের শিক্ষা প্রদান করে। তাই বাংলাদেশের জনগণের সুষ্ঠু সামাজিক ভূমিকা পালন নিশ্চিত করার জন্য সমাজকর্ম পাঠ করা প্রয়োজন।

  • ৯. জনগণকে সংগঠিতকরণ-

বাংলাদেশের জনগণের বহুমুখী সমস্যা সমাধান করে জাতীয় উন্নতি ও অগ্রগতি ত্বরান্বিত করার মাধ্যমে জনগণকে সংগঠিত করা প্রয়োজন। সমাজকর্ম মানুষকে সংগঠিত করার শিক্ষা প্রদান করে। একারণে বাংলাদেশে সমাজকর্ম পাঠের প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য।

  • ১০. গ্রামীণ সমস্যা সমাধান-

 বাংলাদেশের গ্রামীণ এলাকাতেই সবচেয়ে বেশি সমস্যা বিরাজমান। এসব সমস্যা সমাধানের জন্য বাংলাদেশে সমাজকর্মের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।

  • ১১. স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাসমূহের জ্ঞানের উৎস-

বাংলাদেশে কর্মরত স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাসমূহ এদেশের সমাজব্যবস্থা, সামাজিক প্রক্রিয়া, সামাজিক আন্তঃক্রিয়া ও আধুনিক উন্নয়ন ন্নয়ন কৌশল সম্পর্কে কর্মীদের উন্নয়নের জন্য সমাজকর্ম অধ্যয়ন করা একান্ত প্রয়োজন। কোনো প্রাতিষ্ঠানিক জ্ঞান নেই বললেই চলে। এই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কাজই হবে সমাজের সমস্যা দূর করা।

  • ১২. সামাজিক কুপ্রথা ও কুসংস্কার সম্পর্কে সচেতনতা-

বাংলাদেশের বেশির ভাগ মানুষ সামাজিক কুপ্রথা ও কুসংস্কারে বিশ্বাসী, যার ফলে এদেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাধিত হচ্ছে না। সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করার জন্য সমাজকর্ম পাঠ করা একান্ত জরুরি। তাই বাংলাদেশের সমাজদেহে বিরাজমান ব্যাপক কুপ্রথা ও কুসংস্কার

  • ১৩. স্থানীয় নেতৃত্বের বিকাশ সাধন-

 বাংলাদেশ গ্রামপ্রধানদেশ হওয়ায় স্থানীয় পর্যায়ে উন্নয়নমূলক কর্মসূচি প্রণয়ন এবং বাস্তাবায়নের জন্য স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণ ও নেতৃত্বের বিকাশ সাধন করা অপরিহার্য। স্থানীয় নেতৃত্বের বিকাশ সাধনে বাংলাদেশে সমাজকর্ম পাঠের প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। সমাজকর্ম বিশেষভাবে সহায়তা করে থাকে। একারণে একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও ১৪. সামাজিক নীতি ও পরিকল্পনা প্রণয়ন বাংলাদেশ রাজনৈতিক উন্নয়নের জন্য কল্যাণমুখী সামাজিক নীতি ও পরিকল্পনা প্রণয়ন করা একান্ত প্রয়োজন।উন্নয়নশীল দেশ হওয়ায় এদেশের আর্থসামাজিক সমস্যা এতোই।

  • উপসংহার-

পরিশেষে বলা যায় যে, বাংলাদেশ একটি জটিল যে সরকারের একার পক্ষে এ সমস্ত সমস্যার কার্যকর সমাধান দেওয়া সম্ভব নয়। একারণে সরকারি ও বেসরকারি পদক্ষেপ এবং দক্ষ ও প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত সমাজকর্মীদের সুদক্ষ ব্যবস্থাপনা ও পরামর্শ নীতি ও পরিকল্পনার মাধ্যমে বাংলাদেশের সকল সমস্যাই কার্যকরভাবে মোকাবিলা করা সম্ভব।

0 টি ভোট
বিভারিজ রিপোর্টের প্রেক্ষাপটসমূহ কি কি?
  • ভূমিকা-

বিশেষ পরিস্থিতিতে বিশেষ কোনো বিপর্যয়কে মোকাবিলা করার লক্ষ্যে নতুন কিছুর উদ্ভব ঘটে। বিভারিজ রিপোর্টও তার ব্যতিক্রম নয়। ১৯৪১ সালে বিশ্বযুদ্ধজনিত সমস্যা ইংল্যান্ডের আর্থসামাজিক উন্নয়নে বেশ জটিলতার সৃষ্টি করে। যার প্রতিকার ছিল অত্যন্ত প্রয়োজন। তাই নাগরিক সুবিধা সামাজিক নিরাপত্তা বলয় সৃষ্টি করার জন্য গঠিত হয় বিভারিজ রিপোর্ট।

  • পটভূমি বা প্রেক্ষাপট- 

১৯৪১ সালে ২য় বিশ্বযুদ্ধজনিত কারণে ইংল্যান্ডের আর্থসামাজিক সমস্যা মোকাবিলার জন্য সমাজসেবা কর্মসূচির আমূল পরিবর্তন অপরিহার্য হয়ে ওঠে। উক্ত পরিস্থিতি বিবেচনা করে লেবার পার্টির পুনর্গঠন মন্ত্রী আর্থার গ্রিনউড পার্লামেন্টের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী স্যার উইলিয়াম বিভারিজের নেতৃত্বে সামাজিক বিমা ও সংশ্লিষ্ট বিষয়াদির আন্তঃ বিভাগীয় কমিটি গঠন করেন। এরপর বিভিন্ন সরকারি সাহায্য সংস্থা, সামাজিক বিমা, পেনশন, স্বাস্থ্য এবং অর্থনৈতিক কার্যক্রমের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত হয় এ কমিটি। সর্বস্তরের কার্যাবলি পর্যবেক্ষণ এবং পর্যালোচনা - করে ১৯৪২ সালের নভেম্বর মাসে একটি রিপোর্ট পেশ করা হয়। যা সমাজসেবার ইতিহাসে বিভারিজ রিপোর্ট নামে পরিচিত।

  • উপসংহার-

পরিশেষে বলা যায় যে, ইংল্যান্ডের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি প্রণয়নের ভিত্তি হিসেবে বিভারিজ রিপোর্টকে ধরা হয়। বিশ্বের অন্যান্য দেশের সমাজকল্যাণমূলক আইন ও সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আদর্শ ও মডেল হিসেবে এটি স্বীকৃত। বিশেষ করে সাবেক ব্রিটেন কলোনীভুক্ত দেশগুলোতে এটি অনুসরণ করা হয়ে থাকে। এছাড়া বিশ্বের অন্যান্য দেশ বিশেষ করে ইউরোপের দেশগুলোতে অনুসরণ করা হয়।

0 টি ভোট
দুর্যোগ কাকে বলে?

কম বেশি আমরা সবাই দুর্যোগ নামটির সাথে পরিচিত বিশেষ করে উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষ বেশি পরিচিত এ শব্দেটির সাথে।চলুন এই বিষয় নিয়ে জানা-অজানা তথ্যের বিশ্লেষণ জেনে নেই-

  • দুর্যোগ কি?

দুর্যোগ হলো একটি মারাত্মক পরিস্থিতি যা প্রকৃতি বা মানবসৃষ্ট আপদের ফলে দেখা দেয়।এই পরিস্থিতি চলমান সমাজ জীবনকে গভীরভাবে ব্যাহত করে।

  • দুর্যোগ কাকে বলে?

অন্যভাবে বলা যায়, যখন দীর্ঘমেয়াদী অস্বাভাবিক ও অসহনীয় পরিবেশের সৃষ্টির কারণ হিসেবে মানবসৃষ্ট বিভিন্ন কর্মকাণ্ড কিংবা প্রাকৃতিক অবস্থা দায়ী হয়, তখন তাকে দুর্যোগ বলে।

দুর্যোগের ফলে দেশের শস্য ও সম্পদের অনেক ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়ে থাকে।দুর্যোগ কবলিত এলাকাটি তখন নানা দুঃখ দুর্দশার সম্মুখীন হয়।এতে ব্যাপক প্রাণহানি ঘটতে পারে এবং সাধিত হয়ে থাকে।দুর্যোগ কবলিত এলাকার জনসাধারণ সেন্টার (ADPC) এর মতানুসারে - দুর্যোগ হচ্ছে প্রাকৃতিক বা মানবসৃষ্ট একটি ঘটনা, যা হঠাৎকরে ঘটতে পারে অথবা ধীরে ধীরে পরিণত হতে পারে এবং যার ফলাফল আক্রান্ত জনগোষ্ঠিকে অবশ্যই ব্যতিক্রমী প্রচেষ্টার মাধ্যমে মোকাবিলা করতে হয়।জাতিসংঘের দুর্যোগ ত্রাণ সংস্থা ইউএনডিআরও (UNDRO) এর মতানুযায়ী, দুর্যোগ কোন এক সময় ও জায়গায় সংগঠিত একটা ঘটনা যার ফলে ঐ আক্রান্ত সমাজ বা জনগোষ্ঠি ভয়াবহ বিপদের সম্মুখীন হয় এবং ভৌত অবকাঠামোসমূহ ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার ফলে সামাজিক স্থিতিশীলতা সম্পূর্ণ ভেঙ্গে পড়ে।এই অবস্থা সম্পূর্ণরূপে অথবা আংশিক কাটিয়ে ওঠা সবার পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়ে।

  • দুর্যোগের কারণসমূহ কি কি?

বিভিন্ন কারণে দুর্যোগের সৃষ্টি হতে পারে, যেমন-

  • বন্যা - অতি বৃষ্টি, পলি পড়ে নদী ভরাট, সমুদ্রের জোয়ার, ভূমিকম্প প্রভৃতি।
  •  ভূমিকম্প- ভূপৃষ্ঠের টেক্টোনিকপ্লেটসমূহের পারস্পরিক ধাক্কা, ভূপৃষ্ঠের চ্যুতিও ফাটলে শিলার অবস্থান পরিবর্তন, ভূ-অভ্যন্তরের গলিত লাভা বা গ্যাসের প্রবল ধাক্কা, আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত ইত্যাদি।
  •  ঘূর্ণিঝড়- সমুদ্রের উত্তপ্ত তাপমাত্রা, সমুদ্রে সৃষ্টনিম্নচাপ, বায়ুমন্ডলে বাতাসের গতিবেগ একহওয়া প্রভৃতি।
  • খরা- অনাবৃষ্টি, ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়া, বৃক্ষনি

  • আপদ কাকে বলে?

আপদ একটি অস্বাভাবিক ঘটনা যা প্রাকৃতিক, মানবসৃষ্ট কারিগরি ত্রুটির কারণে ঘটতে পারে এবং যা মানুষের জীবন ও জীবিকার ব্যাপক ক্ষতিসাধন করতে পারে।

আপদের প্রাকৃতিক কারণগুলো হচ্ছে- সাইক্লোন, বন্যা, ভূমিকম্প, সুনামি, খরা, নদীভাঙ্গন ইত্যাদি এবং মানবসৃষ্ট কারণগুলো হলো ভবনধ্বস, নৌদুর্ঘটনা, অগ্নিকান্ড, সড়ক দুর্ঘটনা, কারিগরি ত্রুটি যেমন পারমাণবিক দুর্ঘটনা ইত্যাদি। আপদ দুর্যোগ নয়, বরং দুর্যোগের সম্ভাব্য কারণ এবং একটি আপদ ধীরে ধীরে দুর্যোগে পরিণত হতে পারে।যেমন- ভূমিকম্প একটি আপদ, এ কারণে প্রাণহানিসহ অন্যান্য ভৌত ও সামাজিক অবকাঠামো ধ্বংসের মাধ্যমে দুর্যোগ দেখা দিতে পারে।মৃদু ভূকম্পন আপদ কিন্তু এতে সাধারণত দুর্যোগ দেখা দেয় না।

  • বিপদাপন্নতা কাকে বলে?

কোনো জনগোষ্ঠীর বা তার কোনো এক বা একাধিক অংশের (ব্যক্তি বা পরিবার) সুনির্দিষ্ট আপদে আক্রান্ত অথবা আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা এবং ঐ আপদ সংঘটনের ফলে সমাজ ও ব্যক্তির জীবন-যাপনের বিভিন ক্ষেত্রে ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাব্য মাত্রাকে বিপদাপন্নতা বলে।

বিপদাপন্নতাকে নিম্নরূপে প্রকাশ করা যেতে পারে।

বিপদাপন্নতা সমান হবে- ক্ষতির সম্ভাবনা/সমাজেরসামর্থ্য।

অর্থাৎ এই বিপদাপন্নতা বলতে বোঝায় বস্তুগত, আর্থ-সামাজিক এবং পরিবেশগত বিদ্যমান অবস্থা, যা দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কার ইঙ্গিত দেয় এবং যা কোনো ঘটনাকে মোকাবিলা করার জন্য এর সক্ষমতাকে প্রতিকূলভাবে প্রভাবিত করে।আবার একই সঙ্গে এগুলোকে প্রতিরোধ করা বা মোকাবিলা করায় জনগোষ্ঠী অসমর্থ হয়ে থাকতে পারে।সুতরাং বিপদাপন্নতার দুটি দিক রয়েছে।একদিকে তা বিরাজমান আশঙ্কাজনক পরিস্থিতি, অন্যদিকে বিদ্যমান পরিস্থিতি মোকাবিলায় জনগোষ্ঠীর অভ্যন্তরীণ দুর্বলতা, অদক্ষতা ও সীমাবদ্ধতা।

  • দুর্যোগ ঝুঁকি কাকে বলে?

কোনো আপদ বা আপদসমূহ, বিপদাপন্ন জনগোষ্ঠী ও তার আয়, সম্পদ এবং পরিবেশ এই তিন উপাদানের উপর নেতিবাচক সংমিশ্রণের ফলে ক্ষতিকর প্রভাবের যে সম্ভাবনা তৈরী করে তাকে বলে দুর্যোগ ঝুঁকি।

অর্থাৎ সহজে বললে কোনো আপদ ঘটার সম্ভাবনা ও মাত্রা এবং তার ফলে নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর ক্ষতির সম্ভাবনা এই দুইয়ের পারস্পরিকতাই হলো ঝুঁকি।

ঝুঁকিকে নিম্নরূপে প্রকাশ করা যেতে পারে।

ঝুঁকি সমান হবে আপদ সম্ভাবনা X বিপদাপন্নত

দুর্যোগ বলতে কি বোঝায়?

  • দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার ধাপসমূহ কি কি?

দুর্যোগ বিষয়ক স্থায়ী আদেশাবলী (১৯৯৭) অনুযায়ীদুর্যোগ ব্যবস্থাপনারধাপসমূহ হলো-

১. প্রতিরোধ- বিপদ/দুর্ঘটনার বাধা প্রদান।

২. উপশম/প্রশমন- পদক্ষেপসমূহ যা কোনো বিপর্যয় বা দুর্ঘটনাজনিত ফলাফলকে কমাতে পারে।

৩. প্রস্তুতি- প্রকৃত জরুরি অবস্থার সময় অধিকতর কার্যকরীভাবে অথবা সময়োচিত সাড়া প্রদানের জন্য পূর্বে গৃহীত পদক্ষেপসমূহ।

৪. সাড়া প্রদান- জরুরি অবস্থায় অত্যাবশ্যকীয় সেবা প্রদান এবং জনগণের ইতিবাচক সাড়া প্রদান।

৫. পুনর্বাসন- একটি জনগোষ্ঠীর সামাজিক এবং অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িত অত্যাবশ্যকীয় সেবাসমূহের দ্রুত স্বাভাবিক এবং প্রতিস্থাপনের প্রাথমিক প্রচেষ্টা।

৬. পুনর্গঠন- প্রাতিষ্ঠানিক এবং জনগণের সুযোগ- সুবিধাসমূহকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে সহায়তা প্রদান।

৭. উন্নয়ন- জনগোষ্ঠীর সামাজিক ও অর্থনৈতিক অগ্রগতি এবং তা বজায় রাখার জন্য ক্রমাগত প্রচেষ্টা।

দুর্যোগের সময় বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব-

  • ১) স্পোর‍্যাডিক কাকে বলে?

যেসব রোগের প্রাদুর্ভাব কদাচিৎ, অনিয়মিত ও আকস্মিকভাবে দেখা দেয় তাদের স্পোর‍্যাডিক বা বিক্ষিপ্ত রোগ বলা হয়।যেমন- অ্যাক্টিনোমাইকোসিস, অ্যাক্টিনোব্যাসিলোসিস ইত্যাদি।এসব শ্রেণীর রোগ এককভাবে অথবা কয়েকটি একত্রে হয়ে থাকে।

  • ২) মড়ক কাকে বলে?

কোনো সুনির্দিষ্ট রোগ একই সাথে কতগুলি পশু বা পাখিকে আকস্মিক আক্রান্ত করলে সে অবস্থাকে মড়ক বা আউটব্রেক বলা হয়।যেমন- খুরারোগ, পিপিআর রোগ ইত্যাদিমড়ক আকারে দেখা দেয়।

  • ) এন্ডেমিক কি?

যে সমস্ত রোগ একটি দেশে বা অঞ্চলে স্থায়ীভাবে থাকে এবং সামান্য হ্রাস-বৃদ্ধিসহ পুনঃপুনঃ প্রাদুর্ভাব ঘটায় তাদের এডেমিক রোগ বলা হয়।

আবার, একটি দেশে বা অঞ্চলে পশুর যেসব রোগ স্থায়ীভাবে রয়েছে তাদের এনজুটিক রোগ বলা হয়।

  • ৪) এপিডেমিক কাকে বলে?

কোনো রোগের প্রত্যাশিত ফ্রিকোয়েন্সির অতিরিক্ত হারে প্রাদুর্ভাব ঘটলে তাদের এপিডেমিক রোগ বা মহামারী বলা হয়।এপিডেমিক বা মহামারীর সমনাম মড়ক।পশুর ক্ষেত্রে এ অবস্থাকে এপিজুটিক বলা হয়।যেমন- বাংলাদেশে মানুষের কলেরা এবং গরুতে খুরারোগ এপিডেমিকহিসেবে পরিচিত আছে।

  • ৫) প্যানডেমিক কি?

যখন কোনো এপিডেমিক রোগের ব্যাপক বিস্তার ঘটে এমনকি একই সাথে বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে তখন রোগের এ অবস্থাকে বহুব্যাপী বা প্যানডেমিক রোগ বলা হয়।যেমন- উনবিংশতম শতাব্দীর শেষ অংশে রিভারপেস্ট রোগ আফ্রিকা মহাদেশ থেকে পৃথিবীর অন্যানা মহাদেশে ছড়িয়ে পড়ে।এছাড়া এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা সাম্প্রতিককালে প্যানডেমিক রোগ হিসেবে সনাক্ত করা হয়েছে।

  • ৬) বিদেশাগত বা এক্সোটিক রোগ কাকে বলে?

একটি দেশে যে রোগ ছিলনা, বিদেশ থেকে এসে তার প্রাদুর্ভাব ঘটলো সে রোগকে বিদেশাগত রোগ বলে।যেমন- মেষের বলু টাং, এভিয়ান ইনফুয়েঞ্জা ইত্যাদি।

0 টি ভোট
নিয়ম মেনে সফটওয়্যার ডিলিট করার সুবিধা কি?

​​​​​​​নিয়ম মেনে সফটওয়‍্যার ডিলিট করলে সফটওয়‍্যারটির অবশিষ্ট ফাইলগুলো সম্পূর্ণরূপে মুছে যায়। এতে অপারেটিং সিস্টেমের গতি ও কার্যক্ষমতা ঠিক থাকে এবং নতুন সফটওয়্যার ইনস্টল করতেও সমস্যা হয় না। তবে কাজটি করতে সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়।

0 টি ভোট
রেজিস্ট্রি ব্যাকআপ কেন গুরুত্বপূর্ণ?

রেজিস্ট্রি ব্যাকআপ সিস্টেমের গুরুত্বপূর্ণ সেটিংস সংরক্ষণ করে রাখে। কোনো রেজিস্ট্রি সম্পাদনার সময় ভুল হলে ব্যাকআপ ব্যবহার করে সিস্টেমকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা যায়। এটি সিস্টেমের স্থায়িত্ব ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।

"Sharif" র কার্যক্রম

স্কোরঃ
5,760 পয়েন্ট (র‌্যাংক # 1 )
প্রশ্নঃ
95
উত্তরঃ
94
মন্তব্যসমূহঃ
0
ভোট দিয়েছেনঃ
0 টি প্রশ্ন, 0 টি উত্তর
দান করেছেন:
0 সম্মত ভোট, 0 অসম্মত ভোট
প্রাপ্তঃ
0 সম্মত ভোট, 0 অসম্মত ভোট
...