0 টি ভোট
ডিজিটাল মার্কেটিং কাকে বলে?

ডিজিটাল মাধ্যম, টেকনোলজি ও প্লাটফর্ম ব্যববহারের মাধ্যমে ভোক্তার সাথে সংয়োগ স্থাপন করে বাজারজাতকরণের কৌশলকে ডিজিটাল মার্কেটিং বলে।

0 টি ভোট
সমাজকর্ম কি? সমাজকর্মের পরিধি/পরিসর আলোচনা করো?

ভূমিকা- সমাজকর্ম হলো একটি সাহায্যকারী পেশা এবং সমস্যা সমাধানের বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া। প্রাচীনকাল থেকেই স্বেচ্ছামূলক বা অপেশাদার সমাজকল্যাণ সমাজের মানুষের প্রয়োজন এবং বিভিন্ন সমস্যার সমাধান দিয়ে আসছিল। কিন্তু আধুনিক যুগের শিল্পায়ন ও শহরায়নের ফলে উদ্ভূত নতুন ও জটিল সমস্যাসমূহের সমাধান যখন গতানুগতিক সমাজকল্যাণ দ্বারা মোকাবিলা করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে, তখন বস্তুত নতুন এবং জটিল সমস্যার বিজ্ঞান সম্মত সমাধানের লক্ষ্যেই সমাজকর্মের অভ্যুদয়।

  • সমাজকর্মের সংজ্ঞা-

সমাজকর্ম হচ্ছে আধুনিক সমাজকল্যাণের বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি বা কৌশলগত দিক।সমাজকর্ম বলতে সাধারণত বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে সমাজের কল্যাণ সাধনের প্রক্রিয়াকে বুঝায়। অন্যভাবে বলা যায়, ব্যক্তি, দল ও সমষ্টির সমস্যা সমাধানের জন্য সমাজকর্মীরা যে পদ্ধতি বা কৌশলের মাধ্যমে সমাজকর্ম বিষয়ক জ্ঞান, দক্ষতা ও নীতি বাস্তব ক্ষেত্রে প্রয়োগ করে থাকে, তাকে সমাজকর্ম বলে। আধুনিক যুগের শিল্পায়ন ও শহরায়নের ফলে উদ্ভূত নতুন ও জটিল সমস্যার বিজ্ঞানসম্মত সমাধানের লক্ষ্যেই সমাজকর্মের অভ্যুদয়।

প্রামাণ্য সংজ্ঞা- নিম্নে সমাজকর্মের কিছু জনপ্রিয় সংজ্ঞা তুলে ধরা হলো:-

Rex A Skidmore and Milton G Thackery বলেন, "সমাজকর্ম এমন একটি কলাবিজ্ঞান ও পেশা যা মানুষকে কতকগুলো বিশেষ পদ্ধতির মাধ্যমে ব্যক্তিগত, দলীয় ও সমষ্টিগত্র সমস্যা সমাধানে সাহায্য করে। যাতে তারা সন্তোষজনক ব্যক্তিগত, দলীয় ও সামাজিক সম্পর্ক লাভে সক্ষম হয়।"

আর. এইচ. কার্টজ-এর মতে, "সমাজকর্ম হলো এমন একটি পেশাগত সেবা যা সমাজের সদস্য হিসেবে জনগণকে ব্যক্তিগত ও দলীয়ভাবে সহায়তার জন্য বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া ব্যবহার করে। যাতে তারা সমষ্টির সাথে সঙ্গতি রেখে নিজেদের ইচ্ছা ও সামর্থ্য অনুসারে বাঞ্চিত সামাজিক সম্পর্ক ও উন্নতি লাভে সাহায্য করে।"

ওয়ার্নার এইচ বোয়েম-এর মতে, "সমাজকর্ম এমন একটি বৈজ্ঞানিক কার্যক্রম যা মানুষ এবং তার পরিবেশের পারস্পরিক ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া থেকে সৃষ্ট সামাজিক সম্পর্ক ও কার্যাবলি নিয়ন্ত্রণ এবং পরিচালনার মাধ্যমে সামাজিক ভূমিকা পালন ক্ষমতার উন্নয়নে মানুষকে একক ও দলীয়ভাবে সাহায্য করে।"

W. A. Friedlander-এর মতে, "সমাজকর্ম হলো বৈজ্ঞানিক জ্ঞান এবং মানবিক সম্পর্ক বিষয়ক দক্ষতাসম্পন্ন এমন একটি পেশাদারি সেবাকর্ম, যা ব্যক্তিগত ও সামাজিক সন্তুষ্টি এবং স্বাধীনতা লাভে কোনো ব্যক্তিকে একক অথবা দলীয়ভাবে সাহায্য করে।"

করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ড. আকিলা কিয়ানী-এর মতে, "আধুনিক অর্থে সমাজকর্মকে সাধারণত একটি সাহায্যকারী পেশা হিসেবে গ্রহণ করা হয়, যা ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে তাদের বিকাশ ও উন্নয়নে সাহায্য করে।"

  • আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সমাজকর্ম সমিতির সংজ্ঞানুসারে,

"সমাজকর্ম হচ্ছে ব্যক্তি, দল বা জনসমষ্টিকে সাহায্য করার এমন এক পেশাগত কার্যক্রম, যার লক্ষ্য তাদের সামাজিক ভূমিকা পালন ক্ষমতার পুনরুদ্ধার বা শক্তিশালীকরণ এবং সামাজিক ভূমিকা পালনের অনুকূল সামাজিক পরিবেশ সৃষ্টি করা।"

ভারতীয় সমাজকর্ম সম্মেলনের সংজ্ঞানুসারে, "সমাজকর্ম বলতে ব্যক্তি, দল ও জনসমষ্টিকে সুখ ও সমৃদ্ধিপূর্ণ জীবন লাভে সহায়ক মানবীয় দর্শন, বৈজ্ঞানিক জ্ঞান ও দক্ষতার উপর প্রতিষ্ঠিত কল্যাণমূলক কার্যাবলিকে বুঝায়।"

  • সমাজকর্মের অভিধানের সংজ্ঞানুযায়ী,

"সমাজকর্ম একটি ব্যবহারিক বিজ্ঞান, যা মানুষকে একটি মনোসামাজিক ভূমিকা পালনে একটা কার্যকর পর্যায়ে উপনীত হতে শক্তিশালীকরণের লক্ষ্যে সামাজিক পরিবর্তন আনয়নকে প্রভাবিত করে।"

সমাজকর্মের পরিধি/ক্ষেত্রসমূহ/বিষয়বস্তু: নিম্নে সমাজকর্মের পরিধি/ক্ষেত্রসমূহ/বিষয়বস্তু আলোচনা করা হলো-

১. মৌল মানবিক চাহিদা পূরণ- পেশাদার সমাজকর্মের অন্যতম পরিধি বা বিষয়বস্তু হলো মানুষের মৌল মানবিক চাহিদা পূরণ করা। কারণ মৌল মানবিক চাহিদা অপূরণজনিত কারণেই সমাজে নানা রকম সমস্যার উদ্ভব হয়।

২. স্বাস্থ্যসেবা: পরিবারে উপার্জনশীল ব্যক্তির শারীরিক অসুস্থতার কারণে পরিবারের নির্ভরশীল ব্যক্তিরা মারাত্মক, সমস্যায় পড়ে। এমনটি তারা নানা ধরনের অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়ে। এসব অসামাজিক কার্যকলাপ হতে সমাজকে রক্ষা করার জন্য সমাজকর্ম স্বাস্থ্য সেবাকে তার পরিধিভুক্ত করেছে।

৩. সমাজবদ্ধ মানুষ- আধুনিক সমাজকর্মের প্রধান পরিধি বা বিষয়বস্তু হলো সমাজবদ্ধ মানুষ। কেননা সমাজকর্ম সমাজবদ্ধ মানুষের কল্যাণের জন্যই কাজ করে। একারণে কোনো সমাজের সমস্যাবলি জানতে হলে ঐ সমাজের মানুষ ও তাদের চাহিদা সম্পর্কে জ্ঞান আহরণ করতে হয়।

৪. গ্রামীণ ও শহর সমাজসেবা: আধুনিক সমাজকর্মের একটি অন্যতম পরিধি হলো গ্রামীণ ও শহর সমাজ সেবা। কেননা গ্রামে যেমন নানা রকমের সমস্যা রয়েছে, তেমনি শহরেও রয়েছে নানা রকমের সমস্যা। তবে গ্রামীণ ও শহরের সমস্যার স্বরূপ ভিন্ন। কিন্তু সমাজকর্ম গ্রাম ও শহরের জন্য আলাদা আলাদাভাবে গ্রামীণ সমাজ সেবা ও শহরে সমাজসেবা গড়ে ওঠে।

৫. আর্থসামাজিক উন্নয়ন: আর্থসামাজিক উন্নয়ন হলো আধুনিক সমাজকর্মের অন্যতম পরিধি বা বিষয়বস্তু। কেননা প্রতিটি বিষয় বিশ্লেষণ করলে এর পেছনে দায়ী কারণসমূহের মধ্যে সামাজিক ও অর্থনৈতিক কারণ অবশ্যই থাকবে। একারণে সমাজের সঠিক কল্যাণ সাধনের জন্য অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন সাধন করতে হবে।

৬. শারীরিক প্রতিবন্ধী কল্যাণ কর্মসূচি: সমাজকর্মের একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিধি হলো শারীরিক প্রতিবন্ধী কল্যাণ কর্মসূচি। আধুনিক সমাজকর্মের অন্ধ, মুক, বধির এবং অন্যান্য দৈহিক প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি পরিচালনা করে।

৭. সমাজকল্যাণ কর্মসূচি: সমাজকর্মের একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিধি হলো, সমাজকল্যাণ কর্মসূচি। কেননা সমাজের মানুষের সামগ্রিক কল্যাণ সাধনের জন্য সমাজকর্ম সামাজিক নীতি ও পরিকল্পনার মাধ্যমে কিছু কিছু কল্যাণমূলক কর্মসূচি গ্রহণ করে থাকে। যেমন-শিশুকল্যাণ, প্রবীণ কল্যাণ, নারী কল্যাণ, যুবকল্যাণ প্রভৃতি।

৮. মানব সম্পদের সদ্ব্যবহার: পেশাদার সমাজকর্মের অন্যতম পরিধি হলো মানব সম্পদের সদ্ব্যবহার। সমাজকর্ম বিশ্বাস করে যে, সমাজের প্রতিটি ব্যক্তির মধ্যেই কোনো না কোনো সুপ্ত প্রতিভা বিদ্যমান আছে। যদি তা বিকাশের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করা যায়। তাহলে তা বিকশিত হবে। পেশাদার সমাজকর্ম ও প্রতিভা বিকাশের সুযোগ ও পরিবেশ তৈরি করে।

৯. সামাজিক নীতি ও পরিকল্পনা: পেশাদার সমাজকর্মের অন্যতম পরিধি বা বিষয়বস্তু হলো সামাজিক নীতি ও পরিকল্পনা। কেননা একটি সমাজদেহে বিরাজমান সমস্যার সুষ্ঠু সমাধান করতে প্রয়োজন সুষ্ঠু ও কার্যকর সামাজিক নীতি ও পরিকল্পনা। সমাজকর্মীগণ সমস্যা সম্পর্কে ভালোভাবে অবগত হয়ে সামাজিক নীতি ও পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করে থাকে।

১০. সমাজ সংস্কার ও সামাজিক আইন: প্রতিটি মানব সমাজেই নানা ধরনের কুসংস্কার ও কুপ্রথা প্রচলিত থাকে। আর এসমস্ত কুসংস্কারের কারণে অনেক সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। এ কারণে এসমস্ত মোকাবিলা করা দরকার। আর কুসংস্কার দূর করার জন্য প্রয়োজন সামাজিক আইন। সুতরাং সামাজিক আইন প্রণয়ন করা সমাজকর্মের পরিধিভুক্ত।

১১. মাদকাসক্তি নিরাময়: মাদকাসক্তি নিরাময় হলো পেশাদার সমাজকর্মের পরিধিভুক্ত। প্রতিটি সমাজেরই একটা উল্লেখযোগ্য অংশ মাদকাসক্ত, তারা সমাজ ও পরিবারের নানা রকম সমস্যা তৈরি করে। একারণে এসব মাদকাসক্তদের মাদক গ্রহণ হতে বিরত রেখে সঠিক ও যথোপযুক্ত পুনর্বাসন করা সমাজকর্মের আওতাভুক্ত।

১২. অপরাধ ও কিশোর অপরাধ: পেশাদার সমাজকর্মের একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিধি হলো কিশোর অপরাধ ও অপরাধী সংশোধন। এসমস্ত কিশোর অপরাধ ও অপরাধীদের উপযুক্ত কাউন্সিলের মাধ্যমে সংশোধন করা হয়। অপরাধী ও কিশোর অপরাধীদের সংশোধনমূলক কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে প্রবেশন, প্যারোল, মুক্তিপ্রাপ্ত কয়েদিদের পুনর্বাসন প্রভৃতি।

১৩. সামাজিক সমস্যার প্রতিকার ও প্রতিরোধ: সমাজে বিরাজমান বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা যেমন- জনসংখ্যা বৃদ্ধি, বেকারত্ব, ভিক্ষাবৃত্তি, মাদকাসক্তি, পুষ্টিহীনতা ইত্যাদি সমস্যা সমাধান এবং নতুন করে কোনো সমস্যার যাতে উদ্ভব না হয়. তার জন্য সমাজকর্ম কাজ করে। ফলে সমস্যার প্রতিকার ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গড়ে তোলা সমাজকর্মের পরিধিভুক্ত।

উপসংহার

পরিশেষে বলা যায় যে, শিল্পবিপ্লবোত্তর জটিল সমাজ ব্যবস্থায় উদ্ভূত বহুমুখী আর্থসামাজিক সমস্যা সমাধানের লক্ষ্য নিয়েই পেশাদার সমাজকর্মের উদ্ভব। তাই পেশাদার সমাজকর্মের পরিধি বা বিষয়বস্তু হলো সমাজ থেকে সব রকম সমাধান করে একটি কল্যাণধর্মী সমাজব্যবস্থা বিনির্মাণ করা।

0 টি ভোট
গজনবী বংশের প্রতিষ্ঠাতা কে?
আলপ্তগীনরে জামাতা সবুক্তগীন ছিলেন গজনবী বংশের প্রতিষ্ঠাতা।
0 টি ভোট
জনপদ কাকে বলে?
প্রাচীনকালে সমগ্র ভূখণ্ড ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশবিভক্ত ছিল। বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর নাম অনুসারে এগুলো জনপথ হিসেবে গড়ে ওঠে।
0 টি ভোট
গস্তানি শব্দের অর্থ কি?
প্রাচীন বাংলার শব্দ গস্তানি দ্বারা ঐ সকল মেয়েকে বুঝাতো, যারা পুরুষ এর জন্য রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতো।
0 টি ভোট
সমাজকর্ম গবেষণার গুরুত্ব উল্লেখ করো?

ভূমিকা-

 সমাজকর্মের সহায়ক পদ্ধতিগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি পদ্ধতি হলো সামাজিক গবেষণা। সামাজিক গবেষণার মাধ্যমে সমাজের কোনো বিষয়ের সামগ্রিক অবস্থা সম্পর্কে ধারণা অর্জন করা যায়। সামাজিক গবেষণা ছাড়া সমাজকল্যাণমূলক কোনো কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। সামাজিক গবেষণার মাধ্যমেই সমাজস্থ মানুষের অবস্থা, প্রকৃতি, সমস্যা, সমস্যার কারণ, সম্পদ, সীমাবদ্ধতা, সুযোগ প্রভৃতি সম্পর্কে সাম্যক ধারণা পাওয়া যায় এবং সুষ্ঠু পরিকল্পনা প্রণয়ন ও তার ফলপ্রসূ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা যায়।

  • সমাজকর্ম গবেষণার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা-

সমাজকর্ম গবেষণার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। নিম্নে সমাজকর্ম গবেষণার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা আলোচনা করা হলো-

১. সমাজ সম্পর্কে জ্ঞানলাভ-

 সমাজ সম্পর্কে সুশৃঙ্খল ও ধারাবাহিক জ্ঞানলাভের জন্য সামাজিক বা সমাজকর্ম গবেষণার গুরুত্ব অপরিসীম। সমাজকর্ম গবেষণা সমাজের বিভিন্ন বিষয় বা ইস্যু সম্পর্কে সামগ্রিক ধারণা অর্জন করে সমাজের মানুষকে অবগত করে। এর মাধ্যমে জনগণ সমাজ সম্পর্কে প্রকৃত জ্ঞানার্জন করতে পারে।

২. নির্ভরযোগ্য তথ্যসংগ্রহ-

 যেকোনো ধরনের নীতি বা পরিকল্পনা প্রণয়নের প্রধান শর্ত হচ্ছে নির্ভরযোগ্য তথ্যের প্রাপ্যতা। সামাজিক গবেষণার মাধ্যমেই সমাজের প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে জানা যায় এবং প্রয়োজনীয় এবং নির্ভরযোগ্য তথ্য পাওয়া সম্ভব হয়। সুতরাং নির্ভরযোগ্য তথ্যসংগ্রহের ক্ষেত্রে সামাজিক গবেষণার গুরুত্ব অত্যধিক।

৩. সমাজকর্ম পেশার উন্নয়ন- 

সমাজকর্মকে পেশার মর্যাদা পেতে হলে এর সামগ্রিক ব্যবস্থায় উন্নয়ন জরুরি। সামাজিক গবেষণা সমাজকর্ম পেশার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। সামাজিক গবেষণার মাধ্যমে সমাজস্থ সমস্যা, সমস্যার প্রাকৃতি, কারণ, সীমাবদ্ধতা, সুযোগ প্রভৃতি সম্পর্কে ধারণা অগুনি করা যায় যেটি সমায়াকর্ম পেশার উন্নয়নে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

৪. সমস্যা নির্ণয় ও বিশ্লেষণ- 

সমাজকর্মের অন্যতম উদেশ্য হচ্ছে সমস্যার প্রকৃতি নির্ণয় ও বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত উপস্থাপন করা। সামাজিক গবেষণা এক্ষেত্রে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ অমিতা পালন করতে পারে। সামাজিক গবেষণার মাধ্যমে সমাজের বিভিন্ন সমস্যার প্রকৃতি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায় এবং বিচার-বিশ্লেষণ করা অনেকাংশে সহজ হয়।

৫. সামাজিক সমস্যা সমাধান- 

সামাজিক সমস্যা মোকাবিলায় সামাজিক গবেষণা সমাজকর্মকে সর্বোচ্চ সহায়তা করে থাকে। সামাজিক গবেষণার মাধ্যমে সামাজিক সমস্যার সমস্যা সমাধানে জনগণের সম্পদ ও সুযোগ, রাষ্ট্রীয় সহায়তা প্রভৃতি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায় এবং সামাজিক সমস্যার সমাধান প্রদানও সহজ হয়।

৬. সামাজিক আইন প্রণয়ন-

 সামাজিক আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে সামাজকর্ম গবেষণার গুরুত্ব অপরিসীম। কারণ সমাজকর্ম গবেষণার মাধ্যমে সমাজের সমস্যা সমাধানে কি ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে তার একটি নির্দেশনা পাওয়া যায়।

৭. সমাজকর্ম পদ্ধতির উন্নয়ন: 

সমাজকর্ম পদ্ধতির উন্নয়নে। সামাজিক গবেষণা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সামাজিক গবেষণার মাধ্যমে সমাজের জনগণের চাহিদা ও প্রাপ্তির মধ্যে যে দূরত্ব সে সম্পর্কে ধারণা প্রদান করে যা সমাজকর্ম পদ্ধতির উন্নয়নে আবশ্যক।

৮. সচেতনতা সৃষ্টি- 

সামাজিক গবেষণা সচেতনতা সৃষ্টির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সামাজিক গবেষণা অসুবিধাগ্রস্ত শ্রেণির স্বার্থ রক্ষায় যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণে প্রশাসনকে উদ্যোগী করে তোলে।

৯. সামাজিক প্রশাসন পরিচালনা- 

সামাজিক প্রশাসন পরিচালনায় সামাজিক গবেষণা প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা প্রদান করে থাকে। গবেষণার মাধ্যমে সামাজিক প্রশাসন তাদের কার্যক্রম সম্পর্কে প্রয়োজনীয় ধারণা পেয়ে থাকে।

১০. কল্যাণমূলক কর্মসূচি প্রণয়ন-

 সমাজের কল্যাণমূলক কর্মসূচি প্রণয়নের ক্ষেত্রে সামাজিক গবেষণা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এক্ষেত্রে সামাজিক গবেষণা বাস্তব অবস্থা, চাহিদা, সুযোগ, সম্পদ, সীমাবদ্ধতা প্রভৃতি সম্পর্কে ধারণা প্রদান করে কল্যাণমূলক কর্মসূচি প্রণয়নে সহায়তা করে।

১১. সেবার মানোন্নয়ন-

 সামাজিক গবেষণা শুধুমাত্র সেবাপ্রদানে সহায়তা করে তা নয় এটি সেবার মানোন্নয়নেও যথেষ্ট ভূমিকা রাখে। সমাজে কোনো কর্মসূচি বাস্তবায়নের পর সেটি কতোটা ফলপ্রসূ হলো বা জনগণ কতোটা উপকৃত হলো তা সামাজিক গবেষণার মাধ্যমে তা জানা যায়।

  • উপসংহার-

 পরিশেষে বলা যায় যে, সমাজকর্মের সামগ্রিক কর্মকাণ্ড পরিচালনায় সামাজিক গবেষণা অপরিহার্য। একমাত্র সামাজিক গবেষণার মাধ্যমেই সমাজের প্রকৃত চিত্র ফুটে উঠে।আর এর মাধ্যমে সমাজের প্রয়োজন সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট, দিক-নির্দেশনা পাওয়া যায়। ফলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন সম্ভব হয়। সুতরাং সমাজকর্মের সমাজকর্ম গবেষণ্য বা সামাজিক।

0 টি ভোট
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি শুরু হবে কবে?
এটা এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করার কিছু দিন পরেই শুরু হবে।
0 টি ভোট
এডমিশন টেস্ট কবে থেকে?
খুব সম্ভবত ডিসেম্বর মাসের শুরুর দিকে আরম্ভ হতে পারে।ধারণা করা যায় সর্বপ্রথম মেডিকেল এরপর জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা শুরু হতে পারে।
0 টি ভোট
সমাজকর্ম প্রশাসনের নীতিমালা উল্লেখ করো?
  • ভূমিকা-

 সামাজিক প্রশাসন বা সমাজকর্ম প্রশাসন পেশাদার সমাজকর্মের একটি অন্যতম সহায়ক পদ্ধতি। এটি সমাজকল্যাণ সংস্থার কার্যক্রমের সাথে সম্পর্কিত। সমাজকর্ম প্রশাসন একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া যায় মাধ্যমে কোনো প্রতিষ্ঠানের পরিকল্পনা প্রণয়ন, নীতিনির্ধারণ, কার্যক্রম পরিচালনা, দায়িত্ব বণ্টন, সমন্বয়সাধন এবং মূল্যায়ন করা হয়। আর সামাজিক প্রশাসনের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে সামাজিক নীতি বাস্ত বায়নে সামাজিক সর্বাধিক কল্যাণ নিশ্চিত করা। মূলত সামাজিক নীতির বাস্তবায়নে সামাজিক প্রশাসন বিভিন্ন প্রয়োজনীয় কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে।

  • সমাজকর্ম প্রশাসনের নীতিমালা-

প্রত্যেক পদ্ধতিরই নির্দিষ্ট কিছু নীতিমালা থাকে। সমাজকর্মের একটি সহায়ক পদ্ধতি হিসেবে সমাজকর্ম প্রশাসনেরও সুনির্দিষ্ট কিছু নীতিমালা রয়েছে। নিম্নে সমাজকর্ম প্রশাসনের নীতিমালাগুলো আলোচনা করা হলো-

১. যুগোপযোগী পরিকল্পনা প্রণয়ন-

যুগোপযোগী পরিকল্পনা প্রণয়ন সমাজকর্ম প্রশাসনের একটি অন্যতম নীতি। কারণ যুগোপযোগী নীতিমালার মাধ্যমেই সমাজের সমস্যা সম্পর্কে ধারণা অর্জন এবং কার্যকরী সমাধান প্রদান করা সম্ভব হয়। একমাত্র যুগোপযোগী নীতিমালার মাধ্যমেই সমাজের সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব।

২. গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া: সমাজকর্ম সর্বদা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় বিশ্বাসী। সমাজকর্ম কর্মসূচির সফল বাস্তবায়ন নির্ভর করে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মাধ্যমে। তাই সামাজিক প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অবলম্বন করে থাকে। এ প্রক্রিয়ায় জনগণের অংশগ্রহণ সর্বোচ্চ পর্যায়ের হয়ে থাকে।

৩. দায়িত্ব নির্ধারণ: সামাজিক প্রশাসন সর্বদা দায়িত্ব নির্ধারণে দক্ষতা ও অভিজ্ঞতাকে প্রাধান্য দেয়। কারণ দক্ষ কর্মী সব সময়ই কর্মসূচি পরিচালনায় অদক্ষ কর্মীর তুলনায় অধিক ও কার্যকরী ভূমিকা রাখে। সুতরাং যোগ্যতার ভিত্তিতে দায়িত্ব প্রদান সমাজকর্ম প্রশাসনের অন্যতম একটি নীতি।

৪. তত্ত্বাবধান: সামাজিক প্রশাসক কার্যকর করতে সঠিক তত্ত্বাবাধন নীতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ফারুণ কার্যকর তত্ত্বাবধানের উপর কর্মসূচির সফলতা ও বিফলতা নির্ভর করে। এ নীতির মাধ্যমে একজন ব্যক্তি কর্তৃক সর্বোচ্চ কতজনকে তত্ত্বাবধান করা হবে তা নিরূপিত হয়।

৫. নমনীয়তা নীতি- সামাজিক প্রতিষ্ঠান বা এজেন্সিগুলো অতীত কার্যক্রম বিশ্লেষণ করে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা প্রণয়ন করে। আর এজন্য সামাজিক প্রশাসনকে সামাজিক কর্মসূচি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে নমনীয়তার নীতি অনুসরণ করতে হয়। এর মাধ্যমে কর্মসূচির ইতিবাচক ফলাফল প্রকাশ পায়।

৬. জনসমর্থন নীতি- সমাজকর্ম প্রশাসনের প্রশাসক সর্বদা কর্মসূচি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে জনসমর্থন নীতিকে প্রাধান্য দিয়ে থাকে। কারণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে জনগণের সমর্থন ও ইচ্ছা সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। এটি তাই সমাজকর্ম প্রশাসনের অন্যতম একটি নীতি।

৭. সম্পদের সদ্ব্যবহার- কর্মসূচি বাস্তবায়নে জনগণের সম্পদের সদ্ব্যবহার অতি জরুরি। আর সমাজকর্মের লক্ষ্যার্জনে সামাজিক প্রশাসন সর্বদা সম্পদের সদ্ব্যবহারে সর্বোচ্চ গুরুত্ব প্রদান করে থাকে।

৮. সমন্বয়: সমন্বয় নীতি সামাজিক প্রশাসনের অন্যতম একটি নীতি। এ নীতির মাধ্যমে সামাজিক প্রশাসন সরকারি-বেসরকারি ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে। আর সমন্বয়ের মাধ্যমে সমাজের সর্বাধিক কল্যাণ নিশ্চিত হয়।

৯. যোগাযোগ: সমাজকর্ম প্রশাসনের একটি মৌলিক নীতি হচ্ছে যোগাযোগের নীতি। যোগাযোগ নীতির মাধ্যমেই সামাজিক প্রশাসন, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান, এজেন্সি, কর্তৃপক্ষ ও জনগণের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে থাকে এবং কর্মসূচি বাস্তবায়নে অনেকখানি এগিয়ে যায়।

১০. ভারসাম্য- ভারসাম্য নীতি যেকোনো কার্যক্রমের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিষ্ঠানের সকল দিকে ভারসাম্য বজায় রাখার মাধ্যমেই প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়িত হয়। এটি সমাজকর্ম প্রশাসনের একটি গুরুত্বপূর্ণ নীতি।

১১. ব্যক্তির মর্যাদার স্বীকৃতি- সামাজিক প্রশাসন সর্বদা ব্যক্তির মর্যাদাকে সম্মান করে। এক্ষেত্রে ব্যক্তির নিজস্ব গুণাবলিকে প্রাধান্য দেয় এবং চাহিদা ও সার্মথ্য অনুযায়ী উন্নয়নের প্রচেষ্টা চালায়।

১২. মূল্যায়ন: মূল্যায়নের মাধ্যমেই কোনো কর্মসূচির সফলতা ও বিফলতা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। সমাজকর্ম প্রশাসনের একটি নীতি হিসেবে প্রতিটি কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ার সাথে সাথে মূল্যায়ন করা হয়। এর মাধ্যমে প্রকল্প সম্পর্কে সামগ্রিক ধারণা আর্জন সম্ভব হয়।

উপসংহার: পরিশেষে বলা যায় যে, সামাজিক প্রশাসন উল্লিখিত নীতিমালার আলোকে পরিচালিত হয়ে থাকে এ সকল নীতির আশ্রয় নিয়ে সমাজকর্ম প্রশাসন সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি প্রণয়ন এবং সেগুলোর সফল বাস্তবায়ন অনিশ্চিত করে থাকে। মূলত উল্লিখিত নীতিসমূহ প্রশাসক, প্রতিষ্ঠানিক কাঠামো প্রভৃতিকে স্বনির্ভর করার সুযোগ সৃষ্টি করে।

"Sharif" র কার্যক্রম

স্কোরঃ
640 পয়েন্ট (র‌্যাংক # 1 )
প্রশ্নঃ
9
উত্তরঃ
9
মন্তব্যসমূহঃ
0
ভোট দিয়েছেনঃ
0 টি প্রশ্ন, 0 টি উত্তর
দান করেছেন:
0 সম্মত ভোট, 0 অসম্মত ভোট
প্রাপ্তঃ
0 সম্মত ভোট, 0 অসম্মত ভোট
...